adsterra

Kuruluş: Osman 1st Season

দিরিলিস আরতুগলের মোট ১৫০ ভলিউম না দেখে কুরুলুস ওসমান দেখবেন না । অন্যথায় কাহিনী বুঝতে পারবেন না । এটা কুরুলুস সিরিজের প্রথম সিজন । মূল ভাষা টার্কিশ এবং বাংলা সাবটাইটেল দেয়া হয়েছে । শীঘ্রই ২য় সিজন রিলিজ পাবে ।  



কুরলুস উসমান ভলিউম-১

https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1020506144986936/

কুরলুস উসমান ভলিউম-২
__xts__%5B0%5D=68.ARCucNhRm6Lsx08FCa1jFOT0G9TQd1G3Unnx5jGxEo41JCWkbGQc2u2CR0VwxL1BNuY9TX_GiiRqIiVIDKCgwI8bLLZT2zsii60_NxkHFq6o7TWA7mxgFu46qcR6dA89Qpl0aj-Eg6-5YH5muoRdH270Fs8Z9OZ7PXQqqx8KAXUedWsdNo45pymqCPlcO8xRNVDxhZesqnEg15zKzroeDuphcMVCQB9-aPd0jgB4xdXOUMJrSzkt8XZj2uBqGaDFMbgaAfDf0DvNomYTk_v56cQiOW_sKrji-DgcoxyH8_h_-2f_IyjrsLIZOlp8oAgPHR6_xNuKW1mAjw9G-dWrcw&__tn__=K-R" style="color: #385898; cursor: pointer; font-family: inherit; text-decoration-line: none;">https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1020892858281598/

কুরলুস উসমান ভলিউম-৩
https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1021065161597701/

কুরলুস উসমান ভলিউম-৪
https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1021273208243563/

কুরলুস উসমান ভলিউম-৫
https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1021347354902815/

কুরলুস উসমান ভলিউম-৬
https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1021674248203459/

কুরলুস উসমান ভলিউম-৭
https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1021719534865597/

কুরলুস উসমান ভলিউম-৮
https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1021772728193611/

কুরলুস উসমান ভলিউম-৯
https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1021846064852944/

কুরলুস উসমান ভলিউম-১০
https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1038186616552222/

কুরলুস উসমান ভলিউম-১১
https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1026532341050983/

কুরলুস উসমান ভলিউম-১২
https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1033044760399741/

কুরলুস উসমান ভলিউম-১৩
https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1037068916663992/

কুরলুস উসমান ভলিউম-১৪
https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1041490946221789/

কুরলুস উসমান ভলিউম-১৫
https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1047062892331261/

কুরলুস উসমান ভলিউম-১৬
https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1051684325202451/

কুরলুস উসমান ভলিউম-১৭
https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1056909618013255/

কুরলুস উসমান ভলিউম-১৮
https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1072843226419894/

কুরলুস উসমান ভলিউম-১৯
https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1077980615906155/

কুরলুস উসমান ভলিউম-২০
https://www.facebook.com/groups/853593158344903/permalink/1083940328643517/

কুরলুস উসমান ভলিউম-২১
https://www.facebook.com/groups/3244321888953004/permalink/3263871493664710/

কুরলুস উসমান ভলিউম-২২
https://www.facebook.com/groups/3244321888953004/permalink/3264055106979682/

কুরলুস উসমান ভলিউম-২৩
https://www.facebook.com/groups/3244321888953004/permalink/3264274556957737/

কুরলুস উসমান ভলিউম-২৪
https://www.facebook.com/groups/3244321888953004/permalink/3264440070274519/

কুরলুস উসমান ভলিউম-২৫
https://www.facebook.com/groups/3244321888953004/permalink/3265215060197020/

কুরলুস উসমান ভলিউম-২৬
https://www.facebook.com/groups/3244321888953004/permalink/3270583269660199/

কুরলুস উসমান ভলিউম-২৭
https://www.facebook.com/groups/3244321888953004/permalink/3300538303331362/

১ম সিজন সমাপ্ত

ইবনে আরাবী এর সংক্ষিপ্ত জীবনী





 ইবনে আরাবী: দিব্যজ্ঞান লাভ করা এক সুফি দার্শনিক।

ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ মুসলিম দার্শনিকের নাম বলতে বললে কার নাম আপনার মাথায় প্রথমেই চলে আসবে? নিশ্চয়ই ইবনে রুশদ, ইবনে খালদুন কিংবা আল ফারাবির কথা ভাবছেন। একটি নাম, যা হয়তো শতকরা ৯০ জনের মাথায়ই আসবে না, তা হচ্ছে আল আরাবী। কারণ ইতিহাস তার দার্শনিক পরিচয় নির্ণয় করতে ভুল করেছে, তাকে আখ্যায়িত করেছে কেবলই একজন সুফি হিসেবে। অথচ ধর্মকে বিজ্ঞানের আলোকে ব্যাখ্যা করা, কুরআনের বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা, হাদীসের দার্শনিক ব্যাখ্যা, আইনশাস্ত্র, অতীন্দ্রিয়বাদ নিয়ে বিস্তর লেখালেখি করে গেছেন তিনি। অবশ্য এটা ঠিক যে, সুফিবাদ নিয়েই তিনি বেশি কাজ করেছেন। যে কারণে তাকে ‘আল শেইখ আল আকবার’ বা সুফিবাদের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে অভিহিত করা হয়। কিন্তু তাই বলে তার দার্শনিক পরিচয়টা একেবারে ঢেকে ফেলা অবিচারই বটে।

মুহাম্মদ বিন ইউসুফ বিন মুহাম্মদ ইবনে আলি আল আরাবি আল তাই আল হাতিমি তার পুরো নাম! নিজের প্রতিটি লেখার শেষেই লেখক পরিচয়ে এ নামটিই লিখেছেন। সংক্ষেপে ইবনে আল আরাবি নামে পরিচিত হন তিনি। ইসলামিক স্পেনের মুরসিয়া শহরে, ১১৬৫ সালে এক ধনাঢ্য মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পরিবার ছিল কর্ডোবার সবচেয়ে প্রভাবশালী পরিবারগুলোর মধ্যে একটি। এর কারণ কেবল এই নয় যে তার বাবা আলি ইবনে আল আরাবী ছিলেন কর্ডোবার প্রধান বিচারপতি। বরং, তার পরিবারের ছিল গৌরবের এক সুদীর্ঘ ইতিহাস, যার শুরু ইতিহাসখ্যাত হাতেম তাইয়ের সময় থেকে। হাতেম তাই এই পরিবারের পূর্বপুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বলতম নাম।








: আল আরাবীর যখন ৮ বছর, মুরসিয়া তখন পার্শ্ববর্তী এক রাজার আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি সপরিবারে চলে যান লিসবন শহরে। কিন্তু সেখানেও সবকিছু ঠিকঠাক বনিবনা না হওয়ায় সিভিল শহর হয় তার পরবর্তী ঠিকানা। এ শহরেই তিনি শিক্ষা দীক্ষায় পূর্ণতা লাভ করেন, তার ধ্যান-জ্ঞান বিকশিত হয়। সিভিল শহর ছিল মধ্যযুগের সুফিবাদ চর্চার কেন্দ্রস্বরূপ। এ শহরেই অনেক বিখ্যাত সুফির সাক্ষাৎ লাভ করেন আল আরাবী, সংস্পর্শে আসেন অনেক বিদুষী নারীর, যাদের প্রভাব তার পরবর্তী জীবনে গভীরভাবে লক্ষণীয়। এর মধ্যে যে নামটি না বললেই নয়, তা হচ্ছে মার্চেন এর ইয়াসমিন। ইয়াসমিনের গুণমুগ্ধ আরাবীর মুখেই শোনা যাক তিনি কী ধারণা পোষণ করতেন এই নারীর ব্যাপারে।

“তার কাজকর্মে এবং যোগাযোগে বিশুদ্ধ আধ্যাত্মিকতার উপস্থিতি তাকে নিয়ে গেছে শ্রেষ্ঠদের কাতারে!”- ইয়াসমিন সম্পর্কে আল আরাবী।




আবু জাফর নামক এক দরিদ্র কৃষক ছিলেন আল আরাবীর জীবনের প্রথম শিক্ষক, যিনি ঠিকমতো গুণতে জানতেন না, লিখতে পারতেন না! এই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাবিবর্জিত শিক্ষকের নিকটি প্রাথমিকভাবে কুরআন পড়তে শেখেন তিনি। এরপর একে একে সিভিলের সব বিখ্যাত শিক্ষকের কাছে আরবি ব্যাকরণ, কুরআনের ব্যাখ্যা, হাদিসের ব্যাখ্যা, আইনশাস্ত্র এবং ফিকহশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। কৈশোরের পদার্পণ করেই আধ্যাত্মিকতার দিকে ঝুঁকে পড়েন। সমকালীন বিখ্যাত সুফিদের সাথে তার ভাব জমে ওঠে। বিখ্যাত মুসলিম দার্শনিক ইবনে রুশদ ছিলেন আরাবীর বাবার বন্ধু। সে সুবাদের রুশদের সংস্পর্শেও আসেন তিনি। ২০ বছর বয়সে আনুষ্ঠানিকভাবে সুফিবাদকে জীবনের লক্ষ্য হিসেবে বেছে নেন তিনি।

ইবনে আরাবীর নিজের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি দৈববাণী পেয়ে সুফিবাদের দিকে ধাবিত হয়েছেন। ঘটনাটা ১১৮৪ খ্রিস্টাব্দের। সিভিলের কোনো এক সরকারি অনুষ্ঠানে শহরের সকল গণ্যমান্যদের সাথে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন ইবনে আরাবীও। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে যখন মদ্যপান শুরু হয়, তখন আরাবীও সকলের সাথে তাল মেলাতে মদের গ্লাস হাতে নেন। কিন্তু গ্লাসে চুমুক দিতে উদ্যত হলেই তিনি শুনতে পান কোনো এক অদৃশ্য স্বর! “হে মুহাম্মদ, তোমাকে কী এজন্যই সৃষ্টি করা হয়েছে?”

“আমার একাকীত্ব যাপন শুরু হয় ফজরের সময়, যখন সূর্যকিরণ ধীরে ধীরে সব অন্ধকার দূর করে দিতে থাকে। তখন ‘গায়েবি’ (অদেখা/অদৃশ্য) জগতের রহস্যগুলো আমার কাছে একে একে জট খুলতে থাকে। ১৪ মাস আমি নির্জনে ধ্যান করেছি, সেগুলো দেখেছি আর লিখে রেখেছি।” – ইবনে আরাবী

তিনি মদের গ্লাসে চুমুক না দিয়ে সেটি রেখে দিলেন এবং দ্রুত অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করলেন। তার মন বিষণ্ণতায় ভরে উঠলো। খোলা মাঠের মধ্য দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে তিনি দেখা পেলেন এক মেষপালকের। মেষপালকের সাথে হাঁটতে হাঁটতে তিনি শহরের বাইরে চলে এলেন। কোনো এক নির্জন স্থানে এসে মেষপালককে অনুরোধ করলেন পোশাক বদলের জন্য। অতঃপর মেষপালকের ময়লা ছেঁড়া জামা গায়ে জড়িয়ে অজানা গন্তব্যের দিকে হাঁটতে লাগলেন। হাঁটতে হাঁটতে একটি গুহায় প্রবেশ করলেন এবং সেখানে ধ্যানমগ্ন হয়ে ‘জিকরুল্লাহ’ বা আল্লাহর জিক্‌র শুরু করেন। তার এই ধ্যান ভাঙে ৪ দিন পর! সেদিন গুহা থেকে বের হয়ে তিনি বুঝতে পারেন নিজের মধ্যে গুণগত পরিবর্তন চলে এসেছে। তিনি দিব্যজ্ঞান লাভ করেছেন!

এই ঘটনার পর আল আরাবীর জীবনধারা চিরতরে পাল্টে যায়। তিনি প্রায় ১৪ মাস একটানা নিভৃতচারীর মতো জীবন যাপন করেন। এ সময় তিনি কেবলই একজন মানুষের সাথে সাক্ষাৎ করতেন, কথাবার্তা বলতেন। তিনি হচ্ছেন তার দীক্ষা গুরু শেখ ইউসুফ বিন ইউখালফ আল কুমি। টানা ১৪ মাসের নিভৃতযাপন শেষে তিনি নিজ বাসস্থানে ফিরে গেলেও সরকারি কাজে আর যোগ দেননি। যাবতীয় অর্থ সম্পদের মোহ ত্যাগ করে তিনি কেবল জিক্‌র আজগারে সময় ব্যয় করতেন।
[

দ্রুতই ইবনে আরাবীর আধ্যাত্মিক গুণের কথা দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়তে লাগলো। তার সুনাম ছড়িয়ে পড়লো পুরো আন্দালুসিয়ায়। তার বাবার বন্ধু ইবনে রুশদও তার ব্যাপারে অবগত হন এবং তার সাথে সাক্ষাৎ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এ সাক্ষাৎ দুটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রথমত, রুশদের সাথে আরাবীর শৈশবে সাক্ষাৎ হয়েছিল, বয়সকালে আর হয়ে ওঠেনি। দ্বিতীয়ত, দুজন দুই মেরুর শ্রেষ্ঠ মানুষের সাক্ষাৎ ছিল এটি। রুশদ ছিলেন একজন আপাদমস্তক যুক্তিবাদী মানুষ, যিনি সকল প্রকার জ্ঞানকে যুক্তির ছাঁচে ফেলে ঝালিয়ে নিতেন। আর আরাবী ছিলেন এখন দৃষ্টবাদী মানুষ, যিনি আধ্যাত্মিকতার পূজারী ছিলেন।

সাক্ষাৎ দুজনের জন্যই বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ইবনে রুশদ এই সাক্ষাতে আধ্যাত্মিকতা সম্বন্ধে প্রশ্ন করেন, দিব্যজ্ঞানের আগমন সম্পর্কে প্রশ্ন করেন। তাছাড়া আরাবীর নিভৃতে জীবন যাপনের নানা দিক নিয়ে জানার কৌতুহল দেখান তিনি। আরাবীর সাথে এই সাক্ষাতের পরই আধ্যাত্মিকতা নিয়ে পুনরায় চিন্তভাবনা শুরু করেছিলেন রুশদ। অন্যদিকে আরাবীও দর্শনের খুঁটিনাটি জানবার সুযোগ পান। যদিও আরাবী নিজেও একজন উৎকৃষ্ট দার্শনিক ছিলেন, তথাপি রুশদের প্রতি তার ছিল অগাধ শ্রদ্ধা। আধ্যাত্মিকতার মাঝে বিচরণ করেই কীভাবে দার্শনিকতায় নিজেকে সমৃদ্ধ করা যায়, সে অনুপ্রেরণা তিনি রুশদের কাছেই পেয়েছিলেন।

: ইবনে আরাবী নিজের সকল কাজের তালিকা তৈরি করেছিলেন। তার সে তালিকা অনুযায়ী তার মোট লেখার সংখ্যা ২৫১টি, যেগুলোর মধ্যে কিছু অনুবাদকর্মও রয়েছে। যদিও ইতিহাসের বিভিন্ন উদ্ধৃতি অনুযায়ী তার মোট কাজের সংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়ে যায়। তার সবচেয়ে বিখ্যাত ১৬টি বই অনুদিত হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ভাষায়। তবে, তার এত সংখ্যক লেখার কোনোটিইরই আদি কপি বা পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায় না।

এক্ষেত্রে আবার বিতর্কও রয়েছে। কিছু পাণ্ডুলিপিকে অনেকে তার সময়ের বলে উল্লেখ করলেও, অধিকাংশের ধারণা সেগুলো পরবর্তী সময়ের হাতে লেখা প্রতিলিপি মাত্র। যেগুলো আমরা পাই, সেগুলো হয় অনুবাদ কিংবা ছাপা প্রতিলিপি। কেবল তার প্রগাঢ় জ্ঞান আর গভীর সুফি চিন্তা ধারার জন্য তাকে সুফিবাদের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক বলা হতো না, বরং সুফিবাদকে তাত্ত্বিক করে তোলার পেছনে তার অবদানের জন্যই তিনি এরূপ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। তার শ্রেষ্ঠ কাজগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা উল্লেখ করছি পাঠকের সুবিধার জন্য।

৪০ বছরের মধ্যেই জীবনের ভ্রমণ অংশটাও সম্পন্ন করেন ইবনে আরাবী। তিউনিস, ফেজ, মারাক্কেশ, বাগদাদ, সিরিয়া, কায়রো, আলেকজান্দ্রিয়া সহ তৎকালীন পৃথিবীর মোটামুটি সকল গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানকেন্দ্রগুলোতে ভ্রমণ করে ফেলেন তিনি। এরপর তিনি পবিত্র মক্কা নগরীতে ভ্রমণ করেন হজ্বব্রত পালনের জন্য। কিন্তু কাবাশরীফ তাওয়াফ করাকালীন তিনি আবারো একটি দৈব আদেশ পান। তাকে মক্কায় কিছুকাল থাকার জন্য বলা হয়। আদেশ মেনে তিনি মক্কায় ৪ বছর অবস্থান করেন এবং চারটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেন। এদের মধ্যে ‘মিশকাত আল আনওয়ার’ বা হাদিস সমগ্র, ‘রুহু আল কুদুস’ বা আন্দালুসিয়ার সুফিদের জীবনী, ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিল। অন্যদিকে মক্কায় থাকাকালীনই ইবনে আরাবী তার জীবনের শ্রেষ্ঠ রচনা ‘ফুতুহাত আল মাক্কিয়াহ’ রচনার কাজ শুরু করেন।

ক্রুসেডের সময় ইবনে আরাবী আনাতোলিয়ার (তুরস্ক) শাসক সুলতান কায় কাউসের নিকট চিঠি লিখে কঠোরহস্তে ক্রুসেডারদের দমনের অনুরোধ জানান। এর কিছুকাল পর তিনি নিজেই আনাতোলিয়া ভ্রমণ করেন কায় কাউসের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য। সেখানে বেশ কয়েকবছর বসবাস করে দামস্কে স্থায়ী হবার পরিকল্পনা করেন। এখানে থাকাকালীনই বিগত ৩০ বছরের আধ্যাত্মিক শিক্ষা এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে রচনা করেন ‘ফুতুহাত আল মাক্কিয়াহ’। এখানেই ১২৪০ খ্রিস্টাব্দের ৪০ নভেম্বর পরলোকগমন করেন বিখ্যাত সুফি দার্শনিক ইবনে আরাবী।

ইবনে আরাবীর কিছু দর্শন যতটা সহজ ছিল, কিছু দর্শন ছিল ঠিক ততটাই দুর্বোধ্য। দর্শন এবং সুফিবাদের ক্ষেত্রে তার ভাষারীতি এবং বর্ণনার ধরণ সম্পূর্ণ আলাদা। তার শব্দচয়ন এবং বুনন ছিল অত্যন্ত উচ্চমানের। তার লেখা পড়তে সুবিধা করার জন্য তার অনুসারীর কেবল তার লেখার জন্য পৃথক একটি অভিধান তৈরি করেছিলেন! পবিত্র কুরআনে যেরূপ মানবজাতির প্রতি সার্বিক বিধানসমূহ অত্যন্ত গম্ভীর এবং ঝংকারপূর্ণ কবিতার আকারে এসেছে, ইবনে আরাবীর কবিতাগুলো কিছুটা তেমনই। সমগ্র কুরআন একটি অতি উৎকৃষ্ট সাহিত্য। আর এই সাহিত্যকে আদর্শ ধরেই নিজে সাহিত্য রচনা করেছেন আরাবী।

ইবনে আরাবী শুধু সমকালীন সুফিদের শিক্ষক ছিলেন না, তিনি তার পরবর্তী সময়ের সকল সুফি সাধকের জন্য এক চিরন্তন অনুপ্রেরণাদায়ী আদর্শ হয়ে আছেন। সুফিবাদ তার দ্বার যতটুকু প্রভাবিত হয়েছে তা অন্যান্যদের ক্ষেত্রে কল্পনার অতীত। কিন্তু তাই বলে তিনি একজন নিছক সুফি সাধক নন, তিনি একজন উৎকৃষ্ট দার্শনিকও বটে। ইসলামের গৌরবময় স্বর্ণযুগের মহান মনিষীদের দর্শন পড়া অসম্পূর্ণ থেকে যাবে তার দর্শন ছাড়া। শেষ করবো তার একটি উক্তি দিয়ে।

এককথায় ইউনিটি অব বিং এর মূলকথা হচ্ছে, “যেহেতু সৃষ্টিকর্তা সবকিছুর উর্ধ্বে এবং সর্বোৎকৃষ্ট, তাই তিনি বিশ্বব্রহ্মাণ্ড থেকে আলাদা নন কিংবা বিশ্বসংসার তার থেকে আলাদা নয়। বরং, সমগ্র মহাবিশ্ব তার মাঝেই নিমগ্ন আছে!” কিন্তু তার এই গভীর চিন্তা সমকালীন অনেকেই ধরতে পারেনি। ফলে তাকে ‘সর্বেশ্বরবাদী’ উপাধি দেয় অনেকে এই যুক্তিতে যে, তিনি সর্বত্র সৃষ্টিকর্তার উপস্থিতি বিরাজমান বলেছেন হেতু তিনি সবকিছুকেই সৃষ্টিকর্তা বিবেচনা করেন! অথচ তার এই দর্শনে অত্যন্ত চমৎকারভাবে মানুষের জন্য পূর্ণাঙ্গ হয়ে ওঠার বাণী রয়েছে। সৃষ্টিকর্তা যেমনি তার সৃষ্টির মাঝে বিরাজমান, অন্য কথায় তার মাঝেই তার সৃষ্টি নিমজ্জিত হয়ে আছে, তেমনি একজন যথযথ পূর্ণাঙ্গ মানুষ তার কাজের মাঝেই বিরাজমান। অধ্যবসায় আর সাধনার মাধ্যমেই কেবল মানুষ পূর্ণতা লাভ করতে পারে। আর যিনি পূর্ণতা লাভ করেন, তিনি সৃষ্টিকর্তাকে চিনতে পারেন।

“অজ্ঞ ব্যক্তি তার অজ্ঞতা সম্পর্কেও অজ্ঞ। কারণ সে তার অজ্ঞতায় প্রতিনিয়ত অবগাহন করে চলে! জ্ঞানী ব্যক্তিও তার জ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞানী নয়। কারণ সে প্রতিনিয়ত তার জ্ঞানের আলোয় অবগাহন করে চলে! আর যে ব্যক্তি আল্লাহর একক অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে, একটি গাধাও তার চেয়ে বেশি জ্ঞান রাখে বলে সে প্রমাণ করে!”

অন্যদিকে আল আরাবীর ফুতুহাত গ্রন্থটিকে এককথায় সুফিবাদের বিশ্বকোষ বলা যেতে পারে। সুফিবাদের তিনটি মূল স্তম্ভ যুক্তি, প্রথা এবং অন্তর্দৃষ্টিকে তিনি অনুপম দক্ষতায় ব্যাখ্যা করেছেন এই গ্রন্থে। এই গ্রন্থেই তিনি তার বিখ্যাত দর্শন ‘ওয়াহাদাত আল ওয়াজুদ’ বা ‘ইউনিটি অব বিং’ এর পরিচয় করান। এর সহজ বাংলা হতে পারে অস্তিত্ব বা সত্তার একত্ব। তার এই দর্শনের মূল উদ্দেশ্যই ছিল মানুষকে তার অন্তর্নিহিত শক্তি আর সম্ভাবনার নাগাল পাইয়ে দেয়া। যিনি সঠিক পথে গিয়ে নিজের প্রকৃত ক্ষমতা উন্মোচন করতে পারবেন, তিনি ‘ইনসান আল কামিল’ বা পূর্ণাঙ্গ মানুষ হয়ে উঠবেন।

১৭ ই রমজান, শায়খুল আকবার মহিউদ্দিন ইবনে আরাবি (রহ) এর জন্মদিন।
🔯 ইবনে আরাবি (রহ) ছিলেন মহাবীর আরতুগুল গাজির পীর বা শায়েখ। 

সাদা-দাড়িওয়ালা'র অস্তিত্বের সন্ধানে পর্ব-২

 ১ম পর্বে আমরা গুপ্তসংঘের সাথে পরিচিত হয়েছি।এই পর্বে নির্মাতার সম্পর্কে জানবো,



তিনি কেমন মানুষ ছিলেন, কি উদ্দেশ্য নিয়ে পথ চলেছিলেন, কিভাবে কাজ করেছিলেন।
এই পর্বটি যথেষ্ট সেন্সিটিভ, গল্পের ছলে পড়ে নিলেই ভালো, অজান খবরে ঠাসা।আমি জ্ঞান পিপাসুদের মনের খোড়াক যোগাতে লিখতে বসেছি।১ম পর্ব পোস্ট করলে দলিল বিড়ম্বনার সম্মুখীন হতে হয়। অথচ সামান্য সন্ধানে খুজে পাওয়া সম্ভব ছিলো।অতপর কঠিনতম তুর্কিভাষার তথ্যসুত্র গুলো সংগ্রহ করেছি, সপ্তাহব্যাপী।আমার অবশ্য লাভ হয়েছে, জ্ঞানের পিপাসা অনেক খানি মিটেছে।২য় পর্বের বিলম্বতার এটাই কারন। যারা সোর্স খুজবেন নির্দিষ্ট টপিক উল্লেখ করবেন।
যারা নতুন পড়ছেন আগে ১ম পর্ব পড়ে নেন,
না হলে ধারাবাহিকতা বিনষ্ট হবে
(ছবিগুলো গুরুত্বপুর্ন)।

* *



সাদা পাহাড়ের দেশ থেকে বাতাসে ভেসে শীত আসছে।দিগন্ত বিস্তৃত স্তেপ ভুমির পাহারের চুড়ায় বরফ জমতে শুরু করেছে, গাছপালা তেমন নেই গুল্ম আর ঘাসে ভরা, সমান্তরাল ভুমির কোথাও নদীর কাছে ঢালু, কোথায় মাঝে মাঝে টিলা।শীতের আমেজ প্রকট হচ্ছে, এখানকার শীত হীম-ভয়ংকার, গ্রীষ্মেই অনেক পাহাড়ের বরফ গলেনা।বসতি পরিবর্তনের এটাই সময়, যাযারব তুর্কিদের প্রতি বছরের নিয়ম। গ্রীষ্মে ককেশাশ , শীতে এরাল ভ্যালি। বসতির উপদেষ্টা ডুবন্ত সুর্যের দিকে তাকিয়ে গভির চিন্তায় মগ্ন আছে, কারন তারা এখন রাষ্ট্রহীন।তাদের পুর্বপুরুষরা নীল আকাশের নামে রাষ্ট্রের নাম রেখেছিলো "গোকতুর্ক"।পৃথিবীর এপাশ-ওপাশ করে গড়ে তোলা 'গোকতুর্ক' রাষ্ট্র নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।পশ্চিমে ভলগা ও রোমান চাপ, পুর্বে চাইনিজ ও মঙ্গোল চাপ, দুই ধাপে রাষ্ট্র কেড়ে নিয়েছে।"কায়ি"বসতি ও তাদের মিত্ররা এখন রাষ্ট্রহীন, ভাগ্যের উপর নির্ভির করে অটোকান পাহাড়ের নীচে আশ্রয় নিতে যাচ্ছে।ওখানে শীত কম, নদী আছে, পশুগুলো ঘাস ও পানি পাবে।তুর্কিদের যাযাবর জীবনে পশুই একমাত্র বেচে থাকার অবলম্বন।পশু ভালো থাকলে বসতি ভালো থাকবে।



দেদে-করকুত কায়িদের উপদেষ্টা, উপায়ান্ত বের করাই তার কাজ, বসতির বে বসতি শাসন করে, আরো বে'রা আছে সাহায্যকারি। কিন্তু সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ নয়, বাস্তবায়ন করাও রক্ত-কঠিন কাজ।হিসাবে গড়মিল হলে ধ্বংস, অথবা অন্য গোত্রের দাসত্ব।এবারের বসতি স্থানান্তর দুঃশ্চিন্তায় ঘেরা, পুর্ব দিক থেকে মঙোল বা চীনারা আক্রমন করতে পারে।পশ্চিমে আছে জন্তুর মত লালচুলের সিথিয়ানরা,এরা চোরাগোপ্তা হামলা করে। স্থানান্তরের সময় হামলা করলে সকল পশু সম্পদ একসাথে পেয়ে যায়, শিশু ও নারীদের দাস বানাতে পারে।যতবেশি দাসী ততবেশি জনসংখা বাড়াতে পারবে, অন্যদের থেকে শক্তিশালী হবে অথবা বিক্রি করে দেবে।পাশেই রোমান সম্রাজ্য, অর্ধেক পৃথিবীর মালিক, ওদের দাসের বাজার চড়া।এসব কিছু বিবেচনা করতে, দেদে করকুত ধ্যনমগ্ন। একটা স্থায়ি সমাধান বের করা বড় জরুরি, সুর্য ডুবে যাচ্ছে।



কায়ি তুর্কিরা অঘুজ তুর্কির একটি শাখা। কায়িদের জাতিধারা হাজার বছরের পুরানো। তারা স্বাধিনচেতা, বীরবিক্রমে টিকে আছে স্তেপ ভুমিতে। কথনো ককেশাসে, কখনো আনাতোলিয়ায় কথনো ওটোকেনে, হাজার বছর ধরে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে, স্থায়ী ভুমি করতে পারেনি। স্থানিয় বাসিন্দারা সামানন্ত সমাজকেন্দ্রিক, এদের সাথেও বনিবনা হয়না। কায়িরা আকাশের একমাত্র মালিক টেঙ্গরিতে বিশ্বাসি, আর কোন দেবতা নাই। সামানদের অনেক দেবতা, তাদের সমাজও বৈষম্যমুলক।তুর্কিদের সংস্কৃতি ও বিশ্বাস রক্ষা করে যাযাবর থকতে হচ্ছে। আগে এমন ছিলোনা, তাদের পুর্বপুরুষ অঘুজ খান পৃথিবীর চার কোনাই শাসন করেছে। কোন জাতি দন্দ্ব ছিলোনা।কিন্তু এখন সময় পাল্টে গেছে, কোন নিয়মনীতি নেই।জোর যার দখল তার, শক্তি যার বিচার তার।অঘুজদের ভবিষ্যত কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ইনাল-সার-ইয়াভকুই হারানো রাজ্যের নবম শাসক, লজ্জার বেদনা নিয়ে উপদেষ্টা দেদে-করকুতের সাথে আলাপে বসেছে।তাদের কষ্ট ও দুশ্চিন্তা অনেক বিষয়ে। অন্য গোত্রগুলোর অবস্থা ভালোনা, ঘোড়া ও পশু চুরি নিয়ে ঝগড়া নিত্যনৈমিত্তিক ব্যপার, কৃষি জমি দখল নিয়ে সমস্যার অন্ত নেই। স্তেপে ভুমিতে ঘোড়া ও পশুই অবলম্বন। চলাফেরা, যুদ্ধ, শিকার ঘোড়ার উপর নির্ভরশীল , খাদ্য,পোষাক, সোনা পশুপালের উপর নির্ভরশীল। শক্তি ও নিরাপত্তা তলোয়ার, তীর, বর্শার উপর নির্ভরশীল। তাদের আছে শক্তিশালী রীতিনীতি ও সংস্কৃতি , নারী-পুরুষের সমান সম্মানের সমাজ, তাদের পুর্বপুরুষের বেধে দেয়া অলঙ্ঘনীয় অঘুজরীতি। পারিপার্শ্বিক চাপে তাও হুমকির সম্মুক্ষিন।



তারা নতুন কিছু সিদ্ধান্ত নিলো বাইরের দেশগুলো ঘুরে দেখবে। তারা কিভাবে সম্রাজ্য গড়লো, তাদের গোপন শক্তি কি? অঘুজ তুর্কিরা এতো শক্তিশালী ও সাহসি যোদ্ধা হয়েও রাষ্ট্রহীন।রোমানরা ও পারস্যরা হাজার বছর পাল্লাদিয়ে বিশ্ব শাসন করছে। শেষের বছরগুলোতে যুদ্ধের পরে যুদ্ধ করে গেছে দাগিস্তান ও আনাতোলিয়ায়। তদের সীমান্তবর্তী হওয়ায়, যুদ্ধের চাপ তাদের গোত্ররাষ্ট্রের উপর পড়ছিলো, তাতে তারা দুর্বল হয়ে যায়। পুর্বদিকের চাইনিজ গৃহযুদ্ধ শুরু হলে, অঘুজরা হয়ে যায় চিড়েচ্যাপ্টা। এবার অন্য রাষ্ট্র পর্যাবেক্ষন করার পালা।খবর যোগার করতে বিভিন্ন জায়গায় লোক পাঠালো।বসতি স্থানান্তর করেই বেড়িয়ে পড়বে "দেদে-করকুত"।



শীতের ব্যবস্থা শেষে, খবর পর্যাবেক্ষনে দেদে-করকুত। পারসিয়ানদের অবস্থা ভালোনা, সম্রাট খসরু খুন হয়েছে, উত্তরাধিকার নিয়ে ভাই-বোনদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ লেগেছে। এই অবস্থায় রোমানরা আনাতোলিয়া, দাগিস্থান দখল নিয়েছে। কাজার জাতি তাদের সখ্য হয়েছে। এদের সথে কায়িদের অনেকদিনের বিরোধ। তাদের পাশের সীমানা সিরিয়ায় চলছে আরব আতংক। আরব সম্পর্কে তেমন জানে না। এমন রাষ্ট্রের নামই শোনেনি। আরবরা নাকি বিনা রক্তপাতে গোত্র শাসন থেকে একটি রাষ্ট্র বানিয়েছে, তারপর আবার বিনা রক্তপাতে একটি রাজ্য জয় করেছে। অন্য রাজ্যের রাজাদের নিকট চিঠি পাঠিয়েছে, আনুগত্য করার জন্য, কেউ কেউ অনুগতও হয়েছে।তাতেই আশপাশের রাজা-বাদশাহের ঘুম হারাম। দেদে-করকুত বেশ আগ্রহ পেলো , কারন তাদেরও গোত্র শাসন ব্যবস্থা, তাদের পুর্বপুরুষ অঘুজ খানও সমস্ত রাজ্যে চিঠি পাঠিয়েছিলো। অনেক রাজ্য বিনা বাধায় জয় করেছিলো। আরো একটি বিষয় তার মনোযোগ কাড়ছে, আরবের সাফল্যের নায়ক , নিজেকে স্বর্গীয় দ্যুত (নবী) বলে পরিচয় দিয়েছেন।
তারাও একমাত্র স্বর্গীয় দেবতাকে মানে, তাদের পুর্বপুরুষে কেম ও বাকসি ( kam & baksi) নামে দুজন দ্যুত ছিলো , তারাই সমাজের সর্বোচ্চ সন্মানিত ব্যক্তি। সবার উপকার করেছিলেন, সবাই বিনাবাক্যে মানতো।পুর্বপুরুষের গল্পগুলির ধারক, বাহক দেদে-করকুত নিজেই।গোত্রপ্রধানদের সাথে সভা করলেন তিনি, সিদ্ধান্ত হলো দেদে-করকুত আরবিস্থান যাবে অঘুজদের সাফির হয়ে। প্রতিনিধিত্ব করবে আঘুজ তুর্কির ভবিষ্যতের।



সফর মাস ব্যাপি দীর্ঘ হলো। পারসিয়া, আনাতোলিয়া, রোম, সিরিয়া হয়ে আরবের মদীনায় (ইয়াসরিব) পৌছুলেন।তার অঘুজ প্রতিনিধিত্বের খবর প্রকাশ করলেন। সম্মানজনক আতিথেয়তা পেলেন। নিজেকে প্রস্তুত করতে লাগলেন। কয়েকজন সহযোগী (সাহাবি) এর সাথে আলাপ করলেন, জেনে নিলেন আরবের পুর্ব থেকে বর্তমান পর্যন্ত অন্ধকার ও আলোর ইতিহাস, কত কষ্ট আর ত্যাগ স্বীকার করেছেন তারা। তাদের নেতার বিষয়ে জানলেন, তাঁর পুর্বপুরুষের কাহিনি জানলেন, এক শিশুর মরুভুমিতে নির্বাসন থেকে তাদের বংশের সুত্রপাত, নিজ গোত্রের শত্রুতায় দেশত্যাগ করেছিলেন জানলেন। মদীনায় এসে সকল গোত্রকে এক করে রাষ্ট্র বানালেন, কয়েক বছরের সংগ্রাম শেষে বিনা রক্তপাতে মক্কা জয় করলেন।
তাদের নেতা একজন নবী, তিনি যা বলেন তাই হয়। বিশ্বে বৈষম্য,অন্যায় নির্মুল করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে তিঁনি এসেছেন। তাঁর স্বর্গীয় কিতাব আছে, সেখান থেকে বানী প্রচার করেন। মানুষ দলে দলে তাঁর ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে। দেদে-করকুত আশার আলো দেখলেন, জাতি গঠনের মন্ত্রপেলেন।
এবার সাক্ষাতের মাহীন্দ্রক্ষন, দেদে-করকুত নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (দরদ) এর সাক্ষাতে বসলেন, নিজের কথা জানালেন, যা জানার জানলেন, তাকে স্বীকার্য দিয়ে বায়াত দিলেন, ফিরে আসার আগে , জিজ্ঞাস করলেন তারা কি কোনদিন তাদের এলাকায় ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে পারবে? (বাইজান্টাইন যেহেতু বড় শত্রু)

জবাবে শুনলেন সুসংবাদ,
"নিশ্চয় একদিন কুস্তন্তুনিয়া বিজিত হবে। সেই বাহিনীর অধিনায়ক কতোইনা উত্তম এবং সেই বাহিনি কতোই না উৎকৃষ্ট বাহিনী।"

(মাসনাদে আহমাদ ৪/৩৩৫; ১৮৯৫৭)
(ফাতিহ ১৪৫৩ মুভিতে ৬২৭সাল উল্লিখিত)
ইতিহাস পরিবর্তনের সুসংবাদ নিয়ে, আলোকিত দেদে-করকুত ধন্যচিত্তে বসতিতে ফিরে এলেন।

বসতিতে ফিরে দেদে-করকুত গোত্রপ্রধানদের নিয়ে বসলেন,সব কিছু খুলে বললেন,সুসংবাদ জানালেন, ইসলাম ধর্মের কথা জানালেন, ৪জন কবুলও করলো।দেদে-করকুত নতুন পাওয়া জ্ঞান ও সাহসে সবকিছু বিচার বিবেচনা শুরু করে দিলেন, গোত্রে গোত্রে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট থাকলেন। দাড়ি বড় রাখলেন আরাবিদের মতো, সেই দাড়ি সাদা হলো মানুষ তাকে "আকসাকাল" বলে ডাকা শুরু করলো, সাদা-দাড়িওয়ালা। কয়েকদিনের মধ্যে প্রভাবশালী কুটনৈতিক হলেন, সব সমস্যার সমাধান দিতে থাকলেন।তার আরো একটি সম্মান যোগ হলো বাচ্চাদের নাম দিতেন।পরিবার প্রথা শক্তিশালী করলেন, ছেলে মেয়ে কারো অপছন্দে বিয়ে না। শিশুদের প্রতি নজর দিলেন, এদেরকে সঠিকভাবে গড়তে পারলে ভালো জাতী গঠন করা যাবে। প্রথমে তিনি বাচ্চাদের শিক্ষামুলক গল্প শুনাতেন। পরে আবিষ্কার করেন "কুপাজ" (kupaz) নামের দুই তারের এক বেহালা সাদৃশ্য বাদ্যযন্ত্র, কুপাজ বাজাতেন আর কাব্য গাইতেন। গানের মাধ্যমে তাদের পুর্বপুরুষের ঘটনাবহুল শিক্ষনিয় কাহিনি বর্ননা করেন, তাতে অঘুজ খানের বিশ্বজয়, বামসি বেইরেকের বিরহ, স্ত্রীর প্রেমে আজরাইলেন হার,নাম পাবার যোগ্যতা এগুলো ছিলো।প্রতিদিন বাচ্চারা ভিড়তো তিনি কুপাজ বাজিয়ে তাদের গান শোনাতেন, লোকে ওযান-আশিক বলতো, মানে গানের পাখি।এভাবে "ওযান" নামে এক পদের সুচনা হয়, সমাজের সন্মানিত ও আধ্যাতিকতার স্থান।তিনি মহাকাব্য রচনা করেন,১২টি মহাকাব্য ও কুপাজ বাজানোর কম্পোজিসন নিয়ে তার "কিতাবে দেদে করকুত"।



তার একটি শিক্ষামুলক কিতাবও হলো, জ্ঞান ও নৈতিক শিক্ষায় ভরা, তা গানের সুরে মানুষের মুখে মুখে চর্চা হতে লাগলো।

রাজনীতিতে নতুন চাল খাটান, ৬৫৯ সালে ৯জাতি নিয়ে "কঙ্গার ইউনিয়ন" করেন।
সবাইকে আঘুজ খানের রীতিনীতিতে উজ্জীবিত করেন, মাতৃভুমির স্বপ্ন দেখান।
৬৮০ সালে "বরু বদুন" (Boru Budun) নামে একটি গুপ্তসংঘ গঠন হয়।
৫০জন চৌকস যোদ্ধার,এই সংঘের ৫টি বৈশিষ্ট্যঃ
১।স্বর্গীয় খোদার কাছে আত্মসমার্পন।
২।জাতি ও স্বদেশের প্রতি ভালোবাসা।
৩।আনুষ্ঠানিক বিধিতে আনুগত্য।
৪।জ্ঞান ও শৃঙ্খলা।
৫।নিজস্ব সংস্কৃতি ও মুল্যবোধে বিশ্বায়ন।

তাদের খেতাব হয় "জাতির নেকড়ে"।
ওজিফা দেওয়া হয়, চায়না ও শত্রু রাষ্ট্রের খবর সংগ্রহ করা, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে তাদের শক্তি কমিয়ে দেওয়া, প্রতিহত করা।

দেদে করকুত বিভিন্ন জায়গা সফর করতেন,
কপুজ বাজাতেন আর নবী'র সাক্ষাতের কবিতা গাইতেন। মানুষ বিশ্বাস করতো তিনি ভিবিষ্যত বলতে পারেন।সব মানুষ তাকে বিশ্বাস করতো,
তার পরামর্শ নিতো, যেন তাদের "আলামিন"!!

তিনি আব্বাসি খিলাফাত যুগে বেচে ছিলেন।
তার ১০ম শাসক কায়ি ইনাল হান ও পরবর্তী ৩জন শাসকের প্রভাবশালী উপদেষ্টা থাকেন।
বলা হয় তিনি ৩০০ বছর বেচে ছিলেন, কোথাও ২৯৭ বছর।আবার বলা হয় নবী(দুরুদ) এর ওফাতের ১০০ বছর পরও বেচেছিলেন, ৩০০ বছর পর মারা যান। তিনি একবার ইসলামের দাওয়াত নিয়ে লেযগিইল প্যাগানিজদের কাছে যান,ওরা তাকে হত্যা করে। দাগিস্থানের আশে পাশে কোন গুহায় 'ইমাম করকুত' নামে কবর পাওয়া গিয়েছিলো, পরে রহস্যে হারিয়ে যায়।

তিনি তুর্কিদের আদর্শিক পুর্বপুরুষ, তাই নামের আগে 'দেদে' মানে দাদা বা নামের শেষে 'আতা' মানে পিতা সম্বোধন করা হয়।তাদের কিংবদন্তী পিতা, করকুত আতা বা দেদে করকুত (রাঃ)।

"কিতাবে-দেদে-করকুত" এর অনুবাদ কপি ১৮১৫ সালে জার্মানির রয়্যাল লাইব্রেরি অফ ড্রেসডেনে আবিষ্কারের পর বিশ্ব সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে হইচই পড়ে যায়।
মহাকবি দেদে-করকুত লিগেন্ডে পরিনত হয়,
বিশ্ব ইতিহাস পায় তার হারিয়ে যাওয়া কাহিনি,
মহাকাব্যটি ইউনেস্কোর বিভিন্ন লিস্টে জায়গা করে নেয়।

প্রাচীন তুর্কি গুপ্তসংঘ "সাদা-দাড়িওয়ালা"র অস্তিত্বের সন্ধানে - ১ম পর্ব

 




হে আগন্তুক তোমার লক্ষ্য কি?

!! কিজিল ইলমা !!

এই বাক্যের সাথে এখন অনেকেই সুপরিচিত।
তুর্কি মুভি ও সিরিজগুলো দিনদিন জনপ্রিয় হচ্ছে বিশ্ববাসির কাছে, আমাদের দেশও পিছিয়ে নেই।বিশেষ করে, তুর্কি উসমানি সম্রাজ্যের ইতিহাস নির্মিত ড্রামা সিরিজগুলো জনপ্রিয়তার শীর্ষে।

("দিরিলিস আর্তোগুল", "কুরুলুশ উসমান", পায়িতাথ সুলতান আব্দুল হামিদ, কুতলু এমরে, ইউনুস এমরে, কারাথায়, ফাতিহ ১৪৫৩, দেলিলার, তুর্ক গেলিওর, ফিলিন্টা মোস্তফা)

সিরিজগুলো উসমানি সম্রাজ্যের সুন্দর দিন গুলিতে নিয়ে যায়, ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত মুসলিম শাসন অনুভব করায়, শেকড়ের সন্ধান দেয়, দর্শকের মনে আনন্দ আনে।
শান্তিময়, স্বস্তিময় বিনোদন।
যখনই "কিজিল এলমা" শব্দটি উচ্চারিত হয় তখনই এক রহস্যময় পরিবেশ নিয়ে আবির্ভুত হয়,(আকসাকালিলার )সাদা-দাড়িওয়ালা।
পুরো দৃশ্যপট পাল্টিয়ে যায়, অজানা আতংক ভর করে, নতুন কিছু চমকপ্রদ ঘটার ইঙ্গিত দেয়, উত্তেজনা চরম আকারে বিরাজমান হয়।
কারা এই (aksakallilar) সাদা-দাড়িওয়ালা??

আসুন আজ তাদের অস্তিত্বের সন্ধানে বের হই, তারা কি বাস্তব নাকি কবির কল্পনা!!

তুর্কি ইতিহাসের অঘুজ অধ্যায়ের পাতায় পাতায় গানে কবিতায় "আকসাকাল" দের উপস্থিতি।
আকসাকাল (Aqsaqal) মানে বয়ষ্ক ব্যক্তি যার দাড়ি সাদা, সমাজের জ্ঞানী , গোত্রের প্রধান (বে) নির্দেশ করে। এখনো অনেক তুর্কমান গোত্রের প্রধানকে "আকসাকাল" বলে ডাকা হয়।
কিন্তু সর্ব প্রথম এই নামের উৎপত্তি হয়,
"দেদে করকুত" (dede korkut)
নামে এক কায়ি'অঘুজ তুর্কি ব্যক্তির মাধ্যমে,
তিনি প্রথম "আকসাকাল"। তিনি জ্ঞানী ছিলেন, দার্শনিক ছিলেন, তুর্কমেনবাসির সমস্যার সমাধান ছিলেন; ছিলেন গল্পকার, কবি, গায়ক, আরো অনেক গুনের অধিকারি। সকল তুর্কিদের কাছে তিনি আদর্শ পুর্বপুরুষ। এসব থেকেও তার একটি পরিচয় অনেক বড়;
তিনি নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (দুরুদ) এর সাথে সাক্ষাত করতে মদিনা সফরে যান।

তিনি একটি সুসংবাদ বহন করে নিয়ে আসেন,
"একদিন বাইজেন্টাইন ফাতাহ হবে, দুর্গের উপর ইসলামের পতাকা উড়বে।"

নিজ বসতিতে ফিরে দেদে-করকুত এক নতুন আমিতে পরিনত হয়, অঘুজ সর্দার এর সাথে আলোচনা করে, দৃঢ় সংকল্প করে তারা এই অভিযানে অংশ নিবে। সেই থেকে এক মিশনের স্বপ্ন দেখেন, মিশন "কিজিল এলমা"।
"কিজিল এলমা"(kizil Elma) মানে লাল আপেল,
কিন্তু প্রচীন তুর্কীভাষায় "কন্সটান্টিম্পল/রোম" এর নামও "কিজিল এলমা", (এই নাম পরে রোমানরা নিষিদ্ধ করে)।যা তুর্কিস্থান থেকে পশ্চিমে।
এই শহর ফাতাহ করার নিমিত্তে গঠিত গুপ্তসংঘই "আকসাকাল"। যদিও আরো নামে পরিচিত।
আমরা চিনবো সাদা-দাড়িওয়ালা নামে।
যারা বহন করেছিলো, প্রোফেসি (সুসংবাদ)।

হে আগন্তুক (মুসাফির)

এই পথ কোথায় গিয়েছে?
কিজিল এলমা'র দিকে।

তোমার মনজিল কি? জীবন উৎসর্গ (শাহাদাত)।
ভুসলত কি? স্বদেশ।
স্বদেশ কোথায়? সমগ্র বিশ্ব।

এরকম বিভিন্ন ডায়ালগ আছে যা, এই সংঘের কোড ওয়ার্ড। তাদের লক্ষ্য, দর্শন, কর্মপন্থা নির্দেশ করে।অঘুজ ২৪ গোত্র ছাড়াও অন্যন্য তুর্কিদের ভিতর তাদের কার্যক্রম ছিলো, প্রায় সব গোত্রপ্রধানরা নামে-বেনামে এই সংঘের আয়ত্তে ছিলো। তারা সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলো। তাই 'তাদেরকে ডাকা হতো পবিত্র/মহান সংগঠক"। আর্তোগুল, তার বাবা সুলেমান শাহ, ছেলে উসমান সবাই "আকসাকাল" সদস্য।

"সাদা-দাড়িওয়ালা"রা জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প, সংস্কৃতি চর্চা করতো, সুফিদের আশ্রয়দিতো,
গুপ্তচর তৈরি করতো, স্পাই নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলো, ইন্টেলিজেন্সি সরবরাহ করতো।
নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে, তারা রাজ্যের ভিতর ছায়া রাজ্য বানিয়েছিলো। অন্য রাজ্য তারা ইচ্ছা অনুযায়ী গোপনে পরিচালনা করতে পারতো। বরং সুলতানরা তাদের ইন্টেলিজেন্সির মুখাপেক্ষী থাকতো। নিখুঁত বুদ্ধিমত্তা, চৌকশ গুপ্তচর, চুলচেরা হিসাব দিয়ে তারা যেকোন পরিস্থিতি কন্ট্রোলে নিয়ে আসতো, যুদ্ধের মোড় ঘুড়িয়ে দিতো। তাই বলা যায়,
স্বেচ্ছাসেবি "সাদা-দাড়িওয়ালারা" (aksakallilar) প্রথম ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো।

তারা তাদের চিহ্ন "তিনটি নতুন চাঁদ" ছাড়া কিছুই প্রকাশ করতো না। তাদের সংঘে কয়েকটি স্তর ছিলো। একটি দেলুলার:এরা সাহসি বীর যোদ্ধা।
নির্দিষ্ট কাজে এসাসিনের ভুমিকাও পালন করতো, যুদ্ধে তারা ২য়/৩য় ধাপে অংশ নিতো।
একটি গুপ্তচর: এদের ছোট থেকেই আলাদাভাবে গড়ে তোলা হতো। বিভিন্ন ভাষা, ধর্ম ও বুদ্ধিজ্ঞান শিক্ষা দেওয়া হতো। তারপর বিভিন্ন রাষ্ট্রে পাঠানো হতো, প্রাসাদে, গীর্জায়, সেনাবাহিনিতে মিশে জেতো। অন্য গুপ্তচরদের চেক দিতো।যুদ্ধের সময় এরা ৩য়/৪র্থ ধাপে থাকতো।

তাদের ভিতর সুফিদের একটি গ্রুপ ছিলো, তারা মানুষকে নীতি-নৈতিকতা, জ্ঞান-বিজ্ঞান, দর্শন, উন্নত চরিত্র গঠন,সৎসাহস ও অন্যায়ের প্রতিবাদ আইনুল ইয়াকিন ও আধ্যাত্মিকতা শিক্ষা দিতো, সমাজ ব্যবস্থায় নৈতিকতা বজায় রাখতো।
শায়েখ আহমেদ ঈসাভি, শায়েখ জালালুদ্দিন রুমি, শায়েখ সদরুদ্দিন কুনেভি, শায়েখ আহি এভরান, শায়েখ এদেব আলী প্রমুখ।

একদল রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতো।
তুর্কিদের অদম্যতা, যুদ্ধ জয়, রাজ্যজয়, শত্রুদের ষড়যন্ত্র থেকে ইসলামি সম্রাজ্য রক্ষা, নাইট ও মঙ্গোলদের আগ্রাসন থেকে প্রতিরোধ, পুনরায় রাজ্য সংগঠিত করা এই "সাদা-দাড়িওয়ালাদের" অবদান।তাদের প্রতিষ্ঠাতা "দেদে-করকুত" রাঃ।

ঐতিহাসিক রশিদুদ্দিন হামদানির (১৩১৮) ভাষ্যমতে "দেদে করকুত" একজন সাহাবি। সম্মান দিয়ে রাদ্বিয়াল্লাহুতায়ালা আনহু বলা শ্রেয়।



দিরিলিস ও কুরুলুস এর গুরুত্বপূর্ণ শব্দ এর অর্থ

  দিরিলিস = পুনরুত্থান

-কুরুলুস= প্রতিষ্ঠাতা/ ভিত্তি

-জাফর=বিজয়

-বেন= আমি

-বেনিম= আমার

-বিজিম= আমাদের

-সেন= তুমি

-নেদারছে= কি বলছো

-নেরদে= কোথায়

-নেদার= বলো

বে = সম্মানীত ব্যক্তি

বেইম= আমার বে

এফেন্দি = সম্মানসূচক উপাধী

প্রধান বে = বসতির প্রধান

বেইলিক = সিংহাসন

ওবাসি= বসতি

দৌলত =রাষ্ট্র

নেজাম= শাষন

সানজাক = পতাকা

সানজাক বে = গভর্নর

উচবে =সীমান্তের গভর্নর

আল্প= সেনা

আল্পপাশা =সেনা প্রধান

আস্কালার =সৈন্যরা

নোকার = সৈন্য

কমান্ডার = সেনা প্রধান

টেকফুর = দুর্গ প্রধান

প্রিন্সেস = সম্রাটের মেয়ে/ টেকফুর এর স্ত্রী

তুবরা= "ভূমি/ মাটি/কবর

ইনতিকাম= প্রতিশোধ

দিশা = দাঁত

কান =রক্ত

আলতিন =স্বর্ন

আতাশ =আগুন

আদালত = ন্যায় বিচার

হাকিকত =সত্য

গাজা =জিহাদ

হুররিয়াত =স্বাধীনতা

=শাহাদাত = শাহাদাত

হাইদির আল্লাহ্ = আল্লাহ্ এক

হাকতির আল্লাহ্ = আল্লাহ্ চিরঞ্জীব

এইভআল্লাহ্ =ধন্যবাদ /শুকরিয়া

এভেন আল্লাহ্ =আল্লাহ্ 'সহায়

যুক শুকুর = আল্লাহ্ কে ধন্যবাদ

গেস্তর আনা = আসতে পারি

গেলিলে =আসো

উশকে আলদিন = স্বাগতম

চৌকাশা = দীর্ঘজিবী হোন

বুরাক =ছেড়ে দাও /চলে যাও

হাইদে = চলো

ইথার =যথেষ্ট

লাকিন =কিন্তু

ইন্দে/ইমদে/সিমদে= এখন

আ'লা = চমৎকার

বাই বাই =বেশ বেশ

সুচ = থামো

সুইছু =বেজন্মা

কুপেক ="কুকুর

আরসালান =সিংহ

পাশা = মন্ত্রী

ইতলার " =সাহসী

ইতলাররা = সাহসীরা

পাজার =বাজার

নাইট/টেম্পলার =খ্রিষ্ঠান উগ্র যোদ্ধা

এবলাত =প্রথম

বাবা = বাবা

আনা =মা

আবে =বড় ভাই

কারদাশ =ভাই

কারদাশলার = ভাইয়েরা

কারদাশিম =বোন

এম্মে = চাচা

ইংগে =চাচীমা

অগলু =ছেলে

ইবলাত =বাছা/পুত্র

কিযিম =মেয়ে

কিযিমলার =মেয়েরা

আল্লাহ্ রাযুস = আল্লাহ্ আপনার মঙ্গল করুন

আবলা = বড় বোন

বিঃদ্রঃ এগুলো তুর্কি মূল ভাষা থেকে, তাই উচ্চারনে হয়তো কিছু এদিক সেদিক হতে পারে ৷ ভুল হলে ধরিয়ে দিবেন!

Abdullah Al Layek.

দিরিলিস আরতুগল রিভিউ


 সিরিজ যে নামে পরিচিতঃ

তুর্কিঃ Diriliş Ertuğrul

বাংলায়ঃ দিরিলিস আরতুগ্রুল

ইংলিশেঃ Dirilis ertugrul

ইউরোপে যে নামে প্রচার হয়েছেঃ Resurrection Ertugrul (পুনরুত্থান এরতুরুল)

ক্যাটাগড়িঃ ইতিহাস, যুদ্ধ,ড্রামা, জিবনী

রানিং টাইম প্রতি ভলিউমঃ ১১০ মিনিট থেকে ১৪০ মিনিট

ভাষাঃ মূল তুর্কি

অনুবাদঃ ইংরেজী সাবটাইটেল, উর্দু ডাবিং, বাংলা ডাবিং, বাংলা সাবটাইটেল সহ বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাষায় ডাবিং ও সাবটাইটেল হয়েছে

যেখানে পাবেন বাংলা ডাবিং ও বাংলা সাবটাইটেলঃ কায়ী পরিবার ফেসবুক গ্রুপের এবং পেইজের পিন পোস্টে।

ইউটিউবে পাবেনঃ মুল তুর্কি ও উর্দু ডাবিং, বাংলা ডাবিং ইউটিউবে আপলোড করলে কপিরাইটে বল্ক করে দেয় ৷

নেটফ্লিক্স ও টরেন্ট সাইটে পাবেন ইংরেজী সাবটাইটেল সহ ৷

ফেসবুক থেকে ডাউনলোড করা যায় ৷
-ফেসবুক এপস ওপেন করে দিরলিস আরতগুল এর যেকোন ভলিউম এর লিংক কপি করে বিটম্যাট,স্নাপটিউব,টিউবম্যাট বা ফেসবুক এসডি ডাইনলোডার এপস ওপেন করে ভিডিওটার লিংক পেস্ট করলেই আপনাকে নিয়ে যাবে ডাউনলোড অপশনে তারপর আপনার পছন্দের রেজুলেশন 720/480/360 প্রিন্টে নামাতে পারবেন দিরিলিস ৷

মোট সিজনঃ ৫
১ম সিজনঃ ২৬ ভলিউম ( ২০১৫)
২য় সিজনঃ ৩৫ ভলিউম (২০১৬)
৩য় সিজনঃ ৩০ ভলিউম (২০১৭)
৪র্থ সিজনঃ ৩০ ভলিউম ( ২০১৮)
৫ম সিজনঃ ২৯ ভলিউম ( ২০১৯)

Imdb রেটিং (ইন্টারন্যাশনাল মুভি ডাডাবেজ): ৭:৭/১০ ( ২১,০০০)

আমার রেটিংঃ ৯:৫/১০

শুটিং স্পটঃ রিভা গ্রাম, ইস্তাম্বুল, তুর্কি

এওয়ার্ডঃ ৯ টি এবং ৩৩ টি মনোয়ন

রেকর্ডঃ ২০১৪ -২০১৯ পর্যন্ত তুর্কি টিভি সিরিজের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন

Imdb এ তুর্কি সিরিজে প্রথমে রয়েছে,

গিনেস বুক রেকর্ডে নাম লেখিয়েছে দিরিলিসঃ
এবার গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখিয়েছে উসমানীয় সাম্রাজ্যের গৌরবময় উত্থানের সত্য কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত জনপ্রিয় তুর্কি সিরিজ ‘দিরিলিস আরতুগ্রুল’।

বুধবার একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, শ্রেষ্ঠ ড্রামা সিরিজ ক্যাটাগরিতে এই সম্মানজনক মনোনয়ন পেয়েছে আলোচিত এই সিরিজটি।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, এ পর্যন্ত সিরিজটি থেকে আয়কৃত লভ্যাংশের পরিমাণ ১ শ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। গোটা বিশ্বে অন্তত ৩৯ টির ও বেশী ভাষায় ডাবিং হয়েছে দিরিলিস আরতুগ্রুল।

এছাড়া পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন পিটিভিতে সম্প্রচারের জন্য উর্দু ভাষায় প্রথম রমযান থেকে প্রতিদিন এক পর্ব করে ডাবিং প্রচারিত হচ্ছে ।
ইউটিউব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছিলো একটুর জন্য প্রথম পর্ব প্রচারের পর ১ কোটির উপরে দর্শক দেখেছেন এবং যেখানে নরমালী পিটিভির সদস্য ৪০ হাজারের মতন ছিলো সেখানে দিরিলিস প্রচারের পর এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ লাখ সদস্য হয়েছেন ৷
যদি একমাসের মধ্যে ৬৬ লাখ সদস্য হয়ে যেত তাহলে ইউটিউবের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিতো ৷

সারাবিশ্বের অন্ততপক্ষে ৩ শ’ কোটি দর্শক (সারা বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক) আলোচিত এই সিরিজটি দেখেছেন বলে জানিয়েছে গণমাধ্যমগুলো।

আল উম্মাহ আরবি অবলম্বনে বেলায়েত হুসাইন , ( ১১/১২/১৯)

যাদের প্রযোজনাঃ
পরিচালকঃ মেতেন গুনেয়
প্রযোজক ও লেখকঃ মেহমেত বোজদেগ
ফিল্ম স্পন্সরঃ তেকতেন ফিল্ম

সিরিজটি তৈরীতে উদ্যাগ নেনঃ তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোয়ান

সম্প্রচারঃ ২০১৪ সালের ১০ ডিসেম্বর প্রথম ভলিউম প্রচার হয় এবং ৬ জুন ২০১৯ সালে শেষ ভলিউম ( ১৫০) প্রচারের মাধ্যেমে শেষ হয় সিরিজটি ৷

যে টিভি তে প্রচারিত হয়ঃ TRT 1 টিভি ( তুরস্ক রেডিও এন্ড টেলিভিশন সরকারী টিভি)

আন্তর্জাতিক সম্প্রচারঃ আমেরিকা,
যুক্তরাজ্য,কানাডা,সোমালিয়া,ব্রাজিল,আফগানিস্তান,পাকিস্তান,বাংলাদেশ,আলবেনিয়া, আলজেরিয়া,আজার বাইজান, বসনিয়া, চিলি, ইন্দোনিশিয়া, জর্দান,কাজাখাস্তান,দঃআফ্রিকা,উজবেকিস্তান,তিউনিশিয়া, উত্তর সাইপ্রাস,কাতার,আরব দেশ সমূহ,বিশ্বের প্রায় ৫০ টির উপরেদেশে,

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটঃ

১২২৫ সালে মধ্য এশিয়া থেকে চেঙ্গিস খানের মঙ্গলবাহিনীর তাড়া খেয়ে আনাতুলিয়াতে( বর্তমান তুর্কি) যাযাবর এক গোষ্ঠী তাবু গেড়েছে, তাদের গোষ্ঠীর নাম কায়ী গোষ্ঠী, আনাতুলিয়া তখন সেলজুক রাজ্যর অধীনে , সেলজুক রাজ্যর সুলতান তখন আলা উদ্দিন কায়কোবাদ।
কায়ীদের তাবুর সংখ্যা প্রায় ২০০০ ,লোক সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৬০০০ মতন, কায়ী গোষ্ঠীর প্রধান নেতা হলেন সুলেমান শাহ।
সুলমান শাহের চার ছেলে,
সুলেমান শাহ বিয়ে করেছেন দুটি, প্রথম স্ত্রী মারা যাবার পরে হাইমে হাতুন কে বিয়ে করেন, প্রথম স্ত্রীর ঘরে একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়, নাম তার গুন্দারো , হাইমে হাতুনের ঘরে জন্ম নেন তিন সন্তান
সুনগুর তেকিন, আরতুরুল, দুন্দার,

এদিক দিয়ে আরতুরুল হলেন তৃতীয় সন্তান,

কায়ী গোষ্ঠীর সাহসী কামার আগুনের কুন্ডলী থেকে একটি লোহাকে পিডানোর জন্য তুলেছেন, তার সাথে কায়ী গোষ্ঠীর ভবিষৎ যুবক ,
সাহসী কামার লোহাকে তুলেই হাতুরি দিয়ে পিডানো শুরু করছেন আর বলছেন "হাইদির আল্লাহ্ " হাকতির আল্লাহ্ "
তার সাথে সাহসী যুবকটিও হাতুরি পিডাচ্ছে আর
"হাইদির আল্লাহ্ হাকতির আল্লাহ্ " স্লোগান তুলেছে ৷
এ দৃশ্যপট দেখানোর মাধ্যেমে সিরিজটি শুরু হয়,

সাহসী কামারটি ছিলেন “দেলিদেমির ওস্তাদ” আর সাহসী যুবকটি হলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যর স্বপ্নদ্রষ্টা আরতুগ্রুল গাজী,

আরতুগ্রুল গাজীর তিন ঘনিষ্ঠ সহচর
তুরগুত ,বামসী, দোয়ান,
এ তিনজনকে নিয়ে তিনি রওনা হলেন শিকারে যাবেন,
আল্লাহু আকবার ধ্বনী দিয়ে ঘোড়া ছুটিয়ে চলছেন শিকারের খোঁজে।
শিকার খোঁজতে গিয়ে অমানুষ যে শিকার করে ফেলেছেন আজ!

নাইট টেম্পলার তিতুশের ভাই বিষুল যে মুসলিম তিনজন কে বন্দী করে নিয়ে যাচ্ছে মোনাফেক খ্যাত সেলজুক আমির কারাতোয়াগারের কাছে। কারন বন্দী যে খুবই মূল্যবান ৷
বন্দীরা হলো সেলজুক সাম্রাজ্যর সুলতান আলাউদ্দিন কায়কোবাদের বড় ভাই শাহজাদা নোমান, ও তার ছেলে ইঘিত ও তার মেয়ে হালিমা সুলতানা৷

বন্দীদের নিয়ে যাচ্ছে তিতুশের ভাই বিষুল, পথিমধ্যে ঘোড়া ও মানুষেরজন্য পানি পানের বিরতী চলছে, এ সুযোগে শাহজাদা নোমান বন্দী খাঁচা থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু বিধিবাম অল্প একটু যাবার পরে তারা ধরা পরে যান নাইটদের হাতে, ব্যস এখন তাদের খুব নির্যাতন করছে।

এমন সময় এমন বিপদে কে বাঁচাবে?
নোমান চিৎকার করে বললেন ইয়া আল্লাহ্ সাহায্য করো।

এ কথা বলার পরেই দেখা যায় শিকার ছেড়ে চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে চলে এসেছেন আরতুগ্রুল, ব্যস এসব দেখে সহ্য করতে না পেরে জালিমদের বিরুদ্ধে একাই লড়াই শুরু করে দিলেন, তারপর তার তিন সহচর ও ঘটনা স্থলে আসলেন তার নাইটদের কচুকাটা করে হত্যা করে শাহজাদা নোমানদের রক্ষা করলেন ৷

এটা প্রথম ভলিউমের প্রথম ফাইটিং দৃশ্য এ ফাইটিং দৃশ্যতে মধু লাগানো রয়েছে ৷ এদৃশ্য দেখে লক্ষ লক্ষ মানুষ দিরিলিস ভাইরাসে আজ আক্রান্ত ৷

দিরিলিসে গ্রাফিক্স বা উন্নত মানের ইডিড নেই বলতে, যতই দেখবেন মনে হবে সব বাস্তবিক। আরতুগ্রুল ছোট চুরি ও লম্বা তরবারী দিয়ে যুদ্ধ করেন, তিনি আবার বাহাতি,
তুরগুত লড়াই করেন কুঠার দিয়ে,
দোয়ান লড়াই করেন ঢাল ও তরবারী দিয়ে,
আর বামসী তার তো সব সময় দুইটি তরবারী ছাড়া চলে না।

★১ম সিজনে ঘরের বিশ্বাষঘাতকদের সাথে এবং নাইট টেম্পলারদের সাথে লড়াই করতে করতে শেষ হয় এবং পরিশেষে নাইট টেম্পলারদের দুর্গ অামানোস পর্বত বিজয় করেন আরতুগ্রুল বেইম।

★২য় সিজনে দেখা পাবেন পৃথিবীর নিকৃস্ট বাহিনী মঙ্গল বাহিনী, যারা ছেয়েছিলো পুরো পৃথিবী দখল করার, মঙ্গল বাহিনীর প্রধান চেঙ্গিস খান বাহিনী ভারত, চীন, এশিয়া দখল করে আফ্রিকা দিয়ে ডুকে ইউরোপ দখল করতে পারলে তারা পুরো পৃথিবী দখল করে ফেলতো, কিন্তু তাদের এ জয়রথ কে থামিয়ে দেন মামলুক সুলতান সাইফ উদ্দিন কুতুজ ও সেনাপ্রধান রুকুন উদ্দিন বাইবার্স, ১২৬০ সালে আইনজালুত প্রান্তরে মঙ্গলদের সমস্ত অহংকারকে ধুলৎসাত করে ইসলাম কে বিজয়ী করেন সুলতান বাহিনী। মঙ্গলরা বাস্তবে খুব নিকৃস্ট ও ভয়ংকর ছিলো। তাদের দয়ামায়া বলতে কিছু নেই, শিশু ছেলে যখন তিন বছরের তখন থেকেই শিশু ছেলেকে পরিপূর্ণ বেগে তীর ও ঘোড়া চালানো শিখতে হবে, যদি কোন শিশু এসব পারে না তাহলে মঙ্গল সমাজে সে খুবই দুর্বল ও অবহেলিত হয়ে বেঁচে থাকে। আরতুগ্রুল বে খুব লড়াই করেন মঙ্গল বাহিনী ও নিজের বিশ্বাষঘাতক মোনাফেকদের সাথে ৷
২য় সিজনের শেষে বাইজেইন্টাইন সাম্রাজ্যর উদ্দেশ্য রওনা হোন ৷ যেখানে রয়েছে রাসূল ভবিষৎ বাণী করা কন্সটান্টিনোপেল দুর্গ যা পৃথিবীর সমস্ত দুর্গ থেকে সুরক্ষিত ও শক্তিশালী ৷

★ ৩য় সিজনে শুরু হয় ২য় সিজন এর কাল্পনিক ছয় বছর পর সেখানে নাইট টেম্পলার, খ্রিষ্ঠান দুর্গ, এবং পাশের বসতি চাভদার বিশ্বাষঘাতকদের সাথে লড়েন, পরিশেষে নাইট টেম্পলারদের দখলে থাকা বানিজ্যর প্রাণকেন্দ্র হানলি বাজার দখল করেন।

★ ৪র্থ সিজনে শুরু হয় সুলতান আলাউদ্দিন কায়কোবাদের চ্যাপ্টার ,সাথে তো রয়েছে নিজেদের মোনাফেক বিশ্বাষঘাতকরা, তাদের সাথে লড়াই এবং খ্রিষ্ঠান বাহিনীর সাথে লড়াই চলে, সিজন ৪ য়ে সবচে গুরুত্বপূর্ণ কারাযাইসার দুর্গ দখল করা হয় ৷ সিজন ৪ শেষে সুগুতের দিকে রওনা হোন।

★ ৫ম সিজনপ শুরু হয় ৪র্থ সিজন এর কাল্পনিক দশ বছর পরে, সিজন ৫ হলো সবচে গুরুত্বপূর্ণ সিজন, একদিকে নিজেদের মধ্যে মোনাফেক, বিশ্বাষঘাতক, আরেকদিকে নাইট ও খ্রিষ্ঠানরা আরেকদিকে মঙ্গল বাহিনী ৷
মানে চারিদিকে বিপদ একটু পা পিছলেই শেষ ৷
গুরুত্বপূর্ণ বিজয় সুগুত বাজার দখল এবং আরতুগ্রুল বে সীমান্তের গভর্নর হোন ৷
সিজন ৫ এর মাধ্যমে শেষ হয় "দিরিলিস আরতুগ্রুল "

দিরিলিসে আপনি কি পাবেন না?
দিরিলিসে পাবেন রহস্য, ক্রাইম, বিশ্বাষঘাতকতা, যুদ্ধ, ভালোবাসা, ভ্রাতৃত্ব, আনুগত্য , উপদেশ, হাসি, কান্না, দুঃখ, সুখ, ন্যায় বিচার, নিতী রিতী, মানে এ টু জেড সব পাবেন দিরিলিসে,

১ আমি ন্যায় বিচার শিখেছিঃ আরতুগ্রুল বের কাছ থেকে,
২.আমি আনুগত্য শিখেছিঃ তুরগুত, বামসী দোয়ানদের কাছথেকে,
৩.আমি ভালোবাসা শিখেছিঃ হাইমে হাতুন,হালিমা সুলতানার কাছ থেকে
৪.আমি রিতীনিতী শিখেছিঃ সুলেমান শাহের কাছ থেকে,
৫.আমি বিশ্বস্ততা শিখেছিঃ আর্তুক বে, আতসিজ বে, আলিয়ার বে, ক্লাডিয়াস ওমর, সুলেমান, সুনগুর তেকিন, মারগেন, হাচাতুরিয়ান উস্তাদের কাছথেকে
৬.অামি ধৈর্য্য শিখেছিঃ ইবনে আরাবীর কাছ থেকে,
৭.অামি শত কস্টে দুঃখে ঘুড়ে দাড়াতে শিখেছিঃ আরতুগ্রুল বেইমের কাছ থেকে।

নভেম্বর ১৯ সাল থেকে প্রতি বুধবারে তুর্কির atv তে প্রচার হয় "কুরুলুস উসমান"

আপনি কি জানেন ইসলামের মূল খেলাফত কয়টি ?

চারটি
১.খুলাফায়ে রাশেদীন
২.উমাইয়া খেলাফত
৩.আব্বাসী খেলাফত
৪.উসমানী খেলাফত,

এরমধ্যে সবচে বেশী ঠিকেছে উসমানীয় খেলাফত,
১২৯৯ সাল থেকে ১৯২৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ৭০০ বৎসর ঠিকেছিলো ইসলামের স্বর্নউজ্জল উসমানী খেলাফত।

উসমানীয় সাম্রাজ্যর প্রথম সুলতান হলেন আরতুগ্রুল গাজীর তিন নং সন্তান উসমান গাজী ৷
উসমানীয় সাম্রাজ্যর স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন আরতুগ্রুল গাজী
তিনি ছেয়েছিলেন ন্যায় ইনসাফের ভিত্তিতে একটি ইসলামী খেলাফত কায়েম করার, তাই তিনি অামৃত্যু লড়েছেন ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য ৷
উসমানীয়দের পূর্ব পুরুষ আরতুগ্রুল গাজীর জীবনির উপরে নির্মিত হয়েছে "দিরিলিস আরতুগ্রুল টিভি সিরিজ "
এবং দিরিলিসের পরে নির্মিত হয়েছে আরতুগ্রুল গাজীর ছেলে উসমানীয় সাম্রাজ্যর ভিত্তি স্থাপনকারী উসমানের জীবনি নিয়ে "কুরুলুস উসমান" টিভি সিরিজ বর্তমান কুরুলুস উসমানের সিজন ১ প্রচার শেষ হয়েছে, আগামী নভেম্বর /ডিসেম্বরে শুরু হবে সিজন ২ প্রচারের কাজ ৷

উসমানীয় সাম্রাজ্যর ছিলেন প্রায় ৩৬ জন সুলতান
প্রথম সুলতান উসমান গাজী এবং শেষ সুলতান ছিলেন দ্বিতীয় আব্দুল হামিদ ৷ শেষ সুলতান দ্বিতীয় আব্দুল হামিদের জীবনি নিয়ে নির্মিত হয়েছে " পায়িতাহত সুলতান আব্দুল হামিদ টিভি সিরিজ "
বর্তমানে জমজমাট হয়ে চলছে এ তিনটি সিরিজ ৷
এ সিরিজগুলো দেখলে মুসলিমরা তাদের হারানো গৌরবময় ইতিহাসকে ভালো করে জানতেও বুঝতে পারবে ৷ তাই আমি বলবো আপনি আগে দিরিলিস আরতুগ্রুল সিরিজটি দেখেন ৷ প্রথম ভলিউমটা দেখেন যদি ভালো না লাগে তাহলে আর দেখার দরকার নেই ৷

এটার নির্মান ব্যয় নিয়ে নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায় নি তবে অনেকের কাছ থেকে জানা যায় এটার প্রতি ভলিউমে প্রায় ৫০ লক্ষের উপরে ব্যয় হয়েছে ৷

নির্মান সম্পাদনাঃ মেহমেত বোজদাগ সিরিজটি প্রযোজনা করেন এবং মেতিন গুনেয় পরিচালনা করেন। আল্পায় গোক্তেকিন এর আবহ সঙ্গীত প্রস্তুত করেন। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল টিআরটি ১-এ ২০১৪ এর ১০ ডিসেম্বর থেকে প্রতি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ৫৫ মিনিটে সম্প্রচার করা হয়েছিলো ,

সিরিজটির যাযাবর পরিবেশের কোরিওগ্রাফির জন্য হলিউডের এক্সপেন্ডিবলস ২, রোনিন ও কোনান দ্য বারবারিয়ানের মত চলচ্চিত্রের কোরিওগ্রাফার টিমকে তুরস্কে আমন্ত্রণ জানানো হয়, যারা অভিনেতা, ঘোড়া ও অন্যান্য দৃশ্যের জন্য বিশেষ কোরিওগ্রাফির ব্যবস্থা করেন।

সেটে সর্বদা ২৫টি ঘোড়া ও একজন পশুচিকিৎসক সবসময় উপস্থিত রাখা হয়। এছাড়া, সিরিজের প্রয়োজনে রিভাতে একটি ঘোড়াশালও নির্মাণ করা হয়। চিড়িয়াখানার মত করে ছোট আকারের একটি বিশেষ এলাকাও প্রস্তুত করা হয় যাতে শুধু ঘোড়াই নয়, সিরিজের দৃশ্যায়নে প্রয়োজনীয় অন্যান্য পশুপাখিও রাখা হয়েছিলো।

শিল্প নির্দেশনার ক্ষেত্রেও এটি তুর্কি সিরিজের একটি অন্যতম মাইলফলক। সিরিজের প্রয়োজনে তুরস্কের বিভিন্ন স্থান থেকে তামা ও অন্যান্য ধাতুর সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করা হয় ৷

বিঃদ্রঃ আগামী ১০ ডিসেম্বর "দিরিলিস দিবস " পালন করবো এবং ফেসবুকের সব দিরিলিসিয়ানরা তাদের প্রোফাইল ফটো আরতুগ্রুল বেইমের ফটো লাগাবে (ইনশাআল্লাহ্) ,

দিরিলিস দেখে যারা ইসলাম গ্রহণ করেছেনঃ

বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করা সুপারহিট তুর্কি টিভি সিরিয়াল ‘দিরিলিস আরতুগ্রুল’ বা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন মেক্সিকান দম্পতি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি সম্মেলনে এই সিরিয়ালটির অভিনেতাদের একজনের সাথে সাক্ষাত করার পরে ইসলাম গ্রহণ করেন ওই মেক্সিকান দম্পতি। সিরিয়ালটিতে আবদুর রহমান আল্প চরিত্রে অভিনয় করা সেলাল আল একটি মুসলিম সংস্থার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি মুসলিম আমেরিকান সোসাইটির (এমএএস) ২২তম বার্ষিক সভায় অংশ নিয়ে সিরিয়াল এবং তুরস্ক সম্পর্কে আলোচনা করেছিলেন। তিনি যাকাত ফাউন্ডেশনের অতিথি হয়ে এসেছিলেন। পরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানদের এই সংস্থা কতৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবার সাথে দেখা করেন। অনুষ্ঠানের শেষে এক মেক্সিকান দম্পতি এই বিখ্যাত অভিনেতার হাতে কালেমায়ে শাহাদাত পড়ে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। মেক্সিকান দম্পতি বলেন, ‘আমরা তুর্কি টিভি সিরিজ ‘দিরিলিস আরতুগ্রুল’ দেখে এবং বিশ্বজুড়ে তুরস্কের মানবিক কার্যক্রমে প্রভাবিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ মুসলিম হওয়ার পরে অভিনেতা সেলাল আল ওই দম্পতিকে ইংরেজি ও স্প্যানিশ ভাষার দুটি কুরআন ও তুরস্কের পতাকা উপহার দিয়েছেন। অভিনেতা সেলাল আল বলেন, ‘‘এটা আমাদের জন্য আনন্দের বিষয় যে বিশ্বের মানুষেরা তুরস্কের মানবিক কর্মকা-ে খুব আগ্রহী। লস অ্যাঞ্জেলেসে এর উদাহরণ দেখে আমি অনেক খুশি।’’
----- সূত্রঃ যুগান্তর অনলাইন… …

কালের কন্ঠ ২৩ মার্চ, ২০১৯ এর বরাতে জানা যায়,
ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। এমনটি জানালেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগ্লু। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুতকে বরাত দিয়ে এমন খবর প্রকাশ করেছে ‘গেজেট দুভার’।

মেভলুত জানান, গত বছর মাদুরো তাকে বলেছেন তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে পারেন।

বৃহস্পতিবার তুরস্কের আলিনিয়া শহরে অবস্থিত আলাদ্দিন কেইকুবাত বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেয়ার সময় মেভলুত বলেন, মাদুরো ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে পারেন এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ভেনিজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে মাদুরোর সঙ্গে বৈঠক হয়। ওইসময় ওসমানিয়া সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতাকে নিয়ে নির্মিত টিভি সিরিজ ‘আরতুগ্রুল’ দেখার পর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিলেন মাদুরো।

‘বৈঠকের সময় সিরিজ নিয়ে কথা হলে মাদুরো চিৎকার করে দাঁড়িয়ে উঠেন, এবং ‘আরতুগ্রুল’ সিরিজের সব চরিত্রের নাম বলতে বলতে বসে যান।’

মেভলুত জানান, মাদুরো সেসময় বলেছেন, এই সিরিজগুলো ইসলাম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান দেয়, এবং সিরিজগুলোকে ধন্যবাদ, একদিন আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবো।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত আরো বলেন, আমরা মাদুরোর মুখ থেকে এমন কথা শুনে অনেক আনন্দিত।

তবে ঠিক কবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করছেন মাদুরো সে সম্পর্কে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় নি।

মাশাআল্লাহ্ আরো অনেকে ইসলামের দিকে ঝুকছেন

দিরিলিস দেখে যারা প্রভাবিতঃ

১.তুর্কির বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোয়ান,
এরদোয়ান কে এ ধারাবাহিক সিরিজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে এভাবেই উত্তর দেন। সময় হলে দেখি কিন্তু আমার নাতি নাতনীরা এগুলো দেখার জন্য পাগল, প্রথমে দিরিলিস দেখে এরপর পাইতাহত সুলতান আব্দুল হামিদ দেখে, সুলতান আব্দুল হামিদ খানে পরিবেশিত তখনকার অবস্থাগুলো যদি পর্যালোচনা করি তাহলে দেখি, এখনো পশ্চিমারা একই খেলা খেলছে ৷ আবার ও বলছি তাদের সাথে যা করেছিলো আমাদের সাথেও একই খেলা খেলছে ৷ শুধু সময় ও ব্যক্তির পরিবর্তন ঘটেছে,
আমাদের দেশের যুবকদের নিয়ে আমি প্রায় কথা বলি, আমার ধারনা দিরিলিস যুবকদের এক প্রাণসঞ্চার করবে… , যা আমি সত্যিই বিশ্বাস করি, এজন্য এগুলোতে কাজ করায় সকলকে ধন্যবাদ জানাই , এটা আমাগের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের অন্যতম সফলতা, নিজেদের পণ্য আর হ্যাঁ ! এগুলো ইউরোপ কিংবা গলফ দেশগুলোতে অনেক বেশী দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে ৷ যখন ঐ দেশগুলোতে সফরে যাই তখন সবাই আমাকে ধন্যবাদ জানায় ৷
(সূত্রঃ এরদোয়ান দ্যা চেঞ্চ মেকার বই পৃস্টা ১৮০)

২.পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ,
তিনি এতটাই অনুপ্রানিত হয়েছেন যে দিরিলিস কে পাকিস্তানের সরকারী টিভি পিটিভিতে সম্প্রচার করার নির্দেশ দিয়েছেন, ইমরান খান আরো বলেন যুবকদের চরিত্র গঠনে দিরিলিস অবদান রেখেছে,

৩.পাকিস্তানের ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদী এক টুইটে বলেছে মুসলিমদের গৌরবময় সেনালী ইতিহাস জানার জন্য দিরিলিস অনন্য অবদান রাখছে, আমাদের সবার দিরিলিস দেখা উচিত,

৪.পাকিস্তানের ক্রিকেটার আমীর এক টুইটে ভারতের বিরাট কোহলী কে একটি ফটোতে ট্যাগ দিয়ে লিখেছেন ভাই এটা কি তুমি, ফটো টি ছিলো দিরিলিসের অভিনয় করা দোয়ান আল্পের ৷ দোয়ান আল্পের সাথে কোহলির অনেক মিল রয়েছে ৷
পাকিস্তানে খুব প্রভাব ফেলেছে দিরিলিস ৷

ডাঃ জাকির নায়েক বলেছেন আপনি যদি হলিউড, বলিউড মুভি সিরিজে আসক্ত থাকেন তাহলে আপনি দিরিলিস সিরিজটি দেখুন, হলিউড বলিউড মুভি থেকে ১০০ % ভালো দিরিলিস সিরিজ,
আমি বলছিনা দিরিলিস দেখা যায়েজ।

সিরিজে কি সব সত্য ইতিহাস?

যেহেতু এটি একটি টিভি সিরিজ তাই শতভাগ সত্য ইতিহাস পাবেন না, বইয়েও শতভাগ ইতিহাস পাওয়া যায় না, একমাত্র কেরআন ও হাদীস বাদে বাকী বইয়ের লেখা শতভাগ সত্য না হতে পারে,,
সিরিজ তৈরীর জন্য কিছু কাটসাট করা হয়েছে তবে বেশীর ভাগই ইতিহাস নিয়ে তৈরী, আপনি ইতিহাস জানতে হলে কিছু বই পড়ুন উসমানীয় সাম্রাজ্য নিয়ে।

সিরিজ নিয়ে নেগেটিভ মন্তব্যঃ

ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ, মিশরের ইফতা বোর্ড, আরবদেশের ফতোয়া বিভাগগুলো দিরিলিস কে হারাম বলেছে,
তারা বলেছে বে পর্দা ও মিউজিক ব্যবহার করা হয়েছে এরজন্য এটি হারাম
অনেকে মনে করতে পারেন যেহেতু এটি ইসলাম কে প্রমোট করছে সেহেতু হয়তো এটা জায়েজ, এ ধারনা যাতে জন্ম না নেয় সে জন্য তারা দিরিলিসের উপরে ফতোয়া দিয়েছেন ৷ পৃথিবীর কোন মুভি সিরিজই হালাল না।

বিঃদ্রঃ নোংরা, অশ্লীল, সুলতান সুলেমান সহ আরো অনেক পচা সিরিজ মুভি রয়েছে ঐ গুলো তে ফতোয়া বিভাগ নীরব কেন?

বাংলাদেশে ২০১৬ সালে সীমান্তের সুলতান নামে একুশে টিভিতে দিরিলিস প্রচার হয় কিছুদিন প্রচারের পর বন্ধ হয়ে যায়, তারপর পর একি বছর মাছরাঙা টিভি বাংলা ডাবিং করে দিরিলিস প্রচার করে এবং সিজন ১ ও ২ বাংলা ডাবিং করে প্রচার বন্ধ করে দেয় ৷ তাই সিজন ৩-৫ পর্যন্ত বাংলাদেশের দর্শক বাংলা সাবটাইটেল দিয়ে সিরিজটি দেখছেন ৷

যারা নতুন দিরিলিস দেখবেনঃ আপনারা মাছরাঙা টিভি যেটা বাংলা ডাবিং করে ৪০ মিনিটের পর্ব প্রচার করেছে সেটা দেখবেন না, যেহেতু মাছরাঙা টিভির মালিক খ্রিষ্ঠান স্যামচন এইচ চৌধুরী তাই ওরা তাদের জাতি ভাই খ্রিষ্ঠানদের পক্ষ নিয়ে মূল দিরিলিসের কিছু অংশ কাট সাট করে প্রচার করেছে, তাই অাপনি দুই ঘন্টার মূল ভলিউম গুলো দেখবেন লিংক আমাদের কায়ী পরিবার ফেসবুক পেইজ এবং গ্রুপের পিন পোস্টে সব দেওয়া আছে।

যারা পুরাতন দেখসেনঃ আপনারা দিরিলিস সিজন ১ও২ নতুন করে ভলিউম আকারে দেখুন, তাহলে জানতে পারবেন মাছরাঙা টিভি কত কারচুপি করেছে ৷

(যা তথ্য দিলাম উইকিপিডিয়া , যুগান্তর, ইনকিলাব, আল জাজিরা, আওয়ার ইসলাম এগুলোর)

আমার মতামতঃ আপনি যদি মুভি সিনেমা দেখে সময় লস করেন তাহলে আপনার জন্য রয়েছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ড্রামা সিরিজ" দিরিলিস আরতুগ্রুল " এটা একটা নেশা লাগানো সিরিজ, রাতদিন ভুলে যাবেন এ সিরিজের নেশায়, ঘুমের মধ্যেও স্বপ্ন দেখবেন যুদ্ধ করছেন আরতুগ্রুল, তুরগুত, বামসীদের সাথে, আপনার ঘুমন্ত বিবেক, ঘুনেধরা হৃদয়কে উজ্জবীত করার জন্য দিরিলিস দেখুন। পুরো পরিবার কে নিয়ে সিরিজটি দেখতে পারবেন। অশ্লীলতার ছিটেফুটেও নেই ৷

যাদের জন্য এ সিরিজ বাংলায় দেখতে পেলামঃ প্রথমে মাছরাঙা টিভি বাংলা ডাবিং করে ৪০ মিনিটের পর্ব প্রচার করেছে এরজন্য তাদের ধন্যবাদ ৷
তারপর এ পর্বগুলি কস্ট করে সংগ্রহ করেছেন খলিলুর কাদেরী ভাই এবং তিনি ফেসবুকে প্রথম ও দ্বিতীয় সিজনের মোট ২১৬ পর্ব আপলোড করে দিরিলিস অনলাইনে প্রচার করেছেন তার জন্য ধন্যবাদ রইলো৷

তারপর সিজন ১ও ২, বাংলা ডাবিং ৪০ মিনিটের পর্বগুলো কে মূল ভলিউম ২ ঘন্টার আকারে করেছে আযমি পথিক ফেসবুক পেইজ এবং তারা সিজন ৩ ও ৫ বাংলা সাবটাইটেল করে আমাদের দেখার সুযোগ করে দেবার জন্য আযমী পথিকের মেহেদী হাসান রাফি ও মাহমুদ হিশাম ভাইকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে মোবারকবাদ জানাই।
আর সিজন ৪ বাংলা সাবটাইটেলের জন্য আমরা মুসলিম পেজের রতন ভাই ও তাহযীব মিডিয়ার সাদ বিন মনির ও ইসলামী অনুবাদের বদিউজ্জামান মজনু ভাইকে জানাই শুকরান যাজাকাল্লাহ্।

আমাদের লক্ষ্যঃ বাংলার প্রতিটি পরিবার সুস্থ সংস্কৃতির দিরিলিস সিরিজটা দেখুক, তারা বস্তা পচা নোংরা অশ্লীলতা থেকে বিরত থাকুক, যাহাতে সুস্থ সংস্কৃতির ইতিহাস বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছায় সেই উদ্দেশ্যই দিরিলিস আমরা প্রচার করি ৷
লক্ষ্য করা গেছে করোনার সময় মার্চ ২০২০ থেকে বর্তমান পর্যন্ত সবচে বেশী দিরিলিস দর্শক বেড়েছে। যেখানে আগে দিরিলিস গ্রুপগুলোর মেম্বার সংখ্যা ৪০,০০০ হাজার, ২০ হাজার, ১৫ হাজার ছিলো সেখানে দর্শক এ কয়েকমাসে ডবল বেড়ে গেছে। ইনশাআল্লাহ্ এমন একদিন আসবে বাংলাদেশের প্রতিটি কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ, নারী, সবাই বেশী বেশী দিরিলিস, কুরুলুস সুস্থ সংস্কৃতির সিরিজ & মুভি দেখবে ৷

হাইদির আল্লাহ্
হাকতির আল্লাহ্


লেখকঃ Abdullah Al Layke

Kurulus Osman - Season 2

Image: Google কুরলুস উসমান ভলিউম-২৮ https://www.facebook.com/groups/1010099172743461/permalink/1108912709528773/ বিকল্প লিংক https://www.fac...